October 24, 2024, 8:32 am
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি ঃ ঝালকাঠির রাজাপুরে সুদ ব্যবসায়ীর হাত থেকে রেহাই পেয়ে পরিবার নিয়ে বাঁচতে আব্দুল শুক্কুর নামের এক দিনমজুর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার সকাল ১০ টায় রাজাপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে লিখিত বক্তব্য অভিযোগ করে শুক্কুর বলেন, উপজেলার গালুয়া বাজার এলাকায় (শরীফ সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ) নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আমি ২০০৭ সালে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেই। সেই টাকায় পর্যায়ত্রুমে ২০২৩ পর্যন্ত মোট আট লাখ টাকা সুদ হিসেবে পরিশোধ করার পরেও তারা আমার কাছে আরো ৮ লক্ষ টাকা পাইবে বলে দাবী করে আসছে। আব্দুল শুক্কুর (৩৭) গালুয়া এলাকার মোঃ আলতাফ হোসেন’র ছেলে।
শরীফ সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতির লিঃ এর পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম ও তার বাবা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অহিদ শরীফ এলাকার প্রভাবশালী ও চিহ্নিত সুদের কারবারি। এই ঋণ পরিশোধের জন্য নিজের জীবনের চিন্তা না করে রফিকুল ইসলামের নির্দেশে অনেক অন্যায় কাজ করেছি। ২০১৭ সালে রফিকুল ইসলাম আমাকে ডেকে নিয়ে বলেন, আমার ঋণ পরিশোধ হওয়ার একটা পথ খোলা আছে,‘আমি যদি কক্সবাজার থেকে একটি প্যাকেট এনে রফিকুলের কাছে দেই’ তাহলে আমার সব ঋণ শোধ হয়ে যাবে। কোনো কিছু চিন্তা না করেই আমি তার কথায় রাজি হয়ে কক্সবাজার গিয়ে তার এক বন্ধুর দেয়া প্যাকেট নিয়ে আসার সময় চট্রগ্রামে পুলিশের হাতে আটক হই। পরে জানতে পারি ওই প্যাকেটে ৫’শত পিচ ইয়াবা আছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের পরিবারকে ঋনমূক্ত করতে নিজের ইচ্ছায় ইয়াবা বহন করি স্বীকার করি। দীর্ঘ ৩’মাস পরে জেল মুক্ত হয়ে বাড়িতে আসার দুই দিন পর রফিকুল ইসলাম আমাকে ও আমার স্ত্রীকে গালুয়া বাজারে ডেকে আমাকে জামিন করানো ও ৫’শত পিচ ইয়াবার মূল্য বাবদ ৩ লাখ টাকা ধার্য করে সমিতির খাতায় নতুন ঋণ দেখিয়ে ১’শত টাকার সাদা স্ট্যাম্প ও দুই’টি সাদা কার্টিজ পেপারে আমাদের স্বাক্ষর নেয়। প্রতারণার মাধ্যমে তারা নতুন করে আবারও আমার নামে আরো ৩ লাখ টাকার ঋণ চালু করায় আমি নিরুপায় হয়ে যাই। রফিকুল ইসলামের টাকার চাপে আমার অর্থ উর্পাজনের সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমার পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে বসেছি।
গত ৬’মাস ধরে রফিকুল আমাকে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছে। দুইমাস পূর্বে রফিকুল আমাকে আবারও কক্সবাজার থেকে ইয়াবা বহনের প্রস্তাব দিলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে এক মাসের মধ্যে তার মনগড়া ভাবে ধার্য করা সকল টাকা পরিশোধ করতে চাপ সৃষ্টি করে। রফিকুল ইসলাম তার চাহিদা মতো টাকা না পেলে আমি ও আমার পরিবারকে গুম, খুন করবে বলে হুমকি দেয়। এছাড়াও আমি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাদের নির্দেশে লেবারের কাজ ও করেছি। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের পর আমি বাড়ি ফিরে যেতে পারবো কিনা জানি না।
আমি ও আমার পরিবার রফিকুল ইসলাম ও তার পিতা অহিদ শরীফের হাত থেকে যাতে রক্ষা পেতে পারি সে জন্য আপনাদের লেখুনির মাধ্যমে প্রসাশনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগকারী শুক্কুরের সাথে আমার কোনো ঋণ দেয়া নেয়ার সম্পর্ক নাই। গাছের ব্যবসা করায় শুক্কুরের কাছে আমি সাড়ে ৪ লাখ টাকা পাবো।